মো. আবু রায়হান, শেরপুর ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি মোবা : ০১৯৮৯-৩৩৯২৪৭ তাং ২৫/০৯/২০১৭ইং
একের ভিতর তিন
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সরকারী হাসপাতালটি নানা সমস্যায় জর্জরিত
মো. আবু রায়হান, শেরপুর ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি:
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সদর হাসপাতালটি বিভিন্ন সমস্যায় জর-জড়িত হয়ে এখন নিজেই সয্যাশায়ী হয়ে পড়েছে। ৯জন ডাক্তারের স্থলে ২/১ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে উপজেলার ৩ লক্ষাধিক লোকের দায়সারা গোছের চিকিৎসা-সেবা। কারণ হিসেবে জানা যায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা টিএইচএ এর পদটিও শূণ্য। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৯ জন ডাক্তার থাকার কথা, সেক্ষেত্রে কাগজে-কলমে ২/৩ জন ডাক্তার থাকলেও শীফ্ট মেইনটেন্ট করতে গিয়ে তাদের অনেকেই হাসপাতালে পাওয়া যায় না। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে রোগী এসে ডাক্তার সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় সংখক মেডিকেল অফিসার সংকট, নেই এ্যামবুলেন্স ড্রাইভার, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও হাসপাতালের নাইট গার্ডসহ আরও অনেক প্রয়োজনীয় সংখক লোকবল সংকট রয়েছে। এ সকল দায়-দায়িত্ব জুড়া-তালি দিয়ে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। তাই ঝিনাইগাতী উপজেলার ৩ লক্ষাধিক লোকের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে দরিদ্র রোগীরা এসে ডাক্তার না পেয়ে কিংবা প্রয়োজনীয় ঔষধ-পত্র না পেয়ে শূণ্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে যে সমস্ত ঔষধ দিয়ে ৩ লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা চলছে, প্যারাসিটামল, হিস্টারছিন, কটট্রিম, এন্টাসিড ট্যাবলেট দিয়ে। বর্তমানে একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে ৩টি দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ একের ভিতর তিন। একজন মেডিকেল অফিসার কে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ায় কোনটিই সঠিক ভাবে পালন করা সম্ভব হচ্ছে না তারপক্ষে। একজন হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমস্যাসহ অত্র উপজেলার ৩ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার সেবা কেন্দ্রের দায়িত্বে উক্ত কর্মকর্তা। উক্ত প্রধান কর্মকর্তার পদটি শূণ্য থাকে তাহলে হাসপাতালের নানা সমস্যার সমাধান হবে কিভাবে?
এ ব্যাপারে বর্তমানে ৩টি পদের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতালের কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করেন। এছাড়াও তিনি জানান ডাক্তারদের থাকার আবাসিক বাস ভবনগুলি সংস্কারের অভাবে জড়াজীর্ণ ও বসবাস করার অনুপুযোগী হয়ে পড়েছে। যে কারণে ডাক্তাররা যোগদানের পর বাস ভবন ভাল না থাকায় আবাসিক ভাবে ডাক্তাদের থাকা কষ্টসাধ্য। তাই অনেক ডাক্তার যোগদান করার পরেই বদলি হয়ে যাওয়ার জন্য তদবির শুরু করেন এবং বদলি হয়ে চলেও যায়। আর যদি বদলি হতে না পারে তাহলে ডিপুটেশনে থাকে। এজন্য ডাক্তার সংকটের উল্লেখযোগ্য কারণ বলে জানা যায়। উল্লেখ্য, অত্র হাসপাতালে কোন মুমূর্ষ রোগী আসলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য এ্যামবুলেœস থাকলেও ড্রাইভার সংকটকের কারণে জেলা সদরে পাঠানোও সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে নানা দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে অত্র উপজেলার দরিদ্র রোগীরা।
প্রকাশ থাকে যে, উক্ত হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই, যেগুলি রয়েছে ব্যবহার না করার কারণে নষ্ট হচ্ছে।
তাই অত্র উপজেলার চিকিৎসা সুবিধাবঞ্চিত ৩লক্ষাধিক লোকের দাবী অবিলম্বে হাসপাতালের সমস্যাগুলি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে আশু সমস্যার সমাধান করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।